সাভারের আশুলিয়ায় সাইড দেওয়া না দেওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে রোগীসহ অ্যাম্বুলেন্স আটক করে এর চালক ও হেলপারকে মারধর করেছে অপর একটি মাইক্রোবাসের চালকসহ কয়েকজন ব্যক্তি। পরে চাবি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আটক করলে ভিতরেই ছটফট করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আফসানা (০৯)।
মঙ্গলবার (০১ জানুয়ারি) দুপুরে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল ত্রিমোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের নরসিংহপুর বাস স্ট্যান্ডে সাইড দেওয়া না দেওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরে অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাসের চালক।
মারধরকারি মাইক্রোবাসটির চালক হলেন নজরুল ইসলাম। তিনি বাইপাইল এলাকার আব্দুল মজিদের গাড়ির চালক হিসাবে কাজ করেন। অস্যান্যদের পরিচয় পাওয়া যায় নি।
মৃত আফসানা গাইবান্ধা জেলা সদর থানার মধ্য ধানঘড়ার শাপলা মিল এলাকার আলম মিয়ার মেয়ে। আফসানা ক্যানসারের রোগী ছিল, তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছিল।
অ্যাম্বুলেন্সের চালক মারুফ হোসেন বলেন, আমরা রোগী নিয়ে গাইবান্ধায় যাচ্ছিলাম। টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় পৌঁছলে একটি মাইক্রোবাস (চ-১৫৭৩২৩) সাইড দিচ্ছিল না। এসময় আমার হেলপার ইমন তাদের বলে আমাদের অ্যাম্বুলেন্সে ইমারজেন্সি রোগী আছে আমাদের ছেড়ে দেন। এসময় বাকবিতন্ডা হয়। পরে লোকজন ডেকে বাইপাইল এলাকায় গাড়ি আটক করে আমাদের মারধর করে। পরে অ্যাম্বুলেন্সের চাবি নিয়ে যায় তারা। চাবি নেওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে রোগী মারা যায়। পরে পুলিশ এসে রোগীকে স্থানীয় নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
মৃত আফসানার বাবা আলম মিয়া বলেন, আমাদের কোন অভিযোগ নাই। আমার মেয়ে ক্যানসারের রোগী। রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছিল। মহাখালী হাসপাতাল থেকে আমার মেয়েকে ফেরত দিয়েছেন। ডাক্তার বলেছেন মেয়ে বাঁচবে না। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোন অভিযোগ নাই।
প্রত্যক্ষদর্শী পাভেল বলেন, তারা যদি অ্যাম্বুলেন্সটি আটক করে চাবি না নিয়ে যেতো হয়ত আরও কিছুক্ষণ ওই রোগী বাঁচতো। আমরা এই মারধরকারি অমানবিক ব্যক্তিদের বিচার চাই। তিনি বলেন, পরে স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশ অ্যাম্বুলেন্সের চাবি নিয়ে চালককে দিলে তারা হাসপাতালে যায়। ততক্ষণে মারধরকারিরা গাড়ি রেখে পালিয়ে যায়।
এব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম বলেন, মৃত আফসানাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।