পৃথিবীর সব মানুষের চোখের জলের রঙ একই। কারণ, তাদের কষ্টও একই। মানুষ খুশি হলে হাসে, কষ্ট পেলে কাঁদে।
যুদ্ধ ইউক্রেনের মানুষের জীবনে নিয়ে এসেছে সীমাহীন কষ্ট। তারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন ভবনের নিচে বেসমেন্টে; অনেকে বাঙ্কারে।
কষ্টে কাঁদছেন ইউক্রেনের মানুষ। সন্তানকে প্রয়োজনে খাবার দিতে পারছেন না তারা। শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না; খেলতে যেতে পারছে না মাঠে। চিকিৎসার অভাবে বৃদ্ধ মা-বাবা চোখের সামনে মারা যাচ্ছেন।
যুদ্ধ মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে, সন্তানের কাছ থেকে তার পিতাকে পৃথক করছে। তারা সীমাহীন অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন।
লাখ লাখ ইউক্রেনীয় দেশ ছাড়াছেন। জাতিসংঘের হিসেবে, ৩ লাখ ৬০ হাজার ইউক্রেনীয় যুদ্ধের কারণে দেশ ছেড়েছেন। তারা স্বজনদের রেখে প্রতিবেশি দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
দেশ ছাড়া ইউক্রেনীয়দের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এ রকমই একজন ইউক্রেনীয় নারী জান্না গ্যাব্রিল্যাঙ্কো। চেরনিহিভ শহরের বাসিন্দা ছিলেন তিনি।
দেশ ছাড়ার প্রাককালে ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্তে কান্না বিজড়িত কণ্ঠে তিনি বলছিলেন তার কষ্টের কথা।
বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘কারাগারে বসেই দিন কাটে আমার মা-বাবা, বোন ও সন্তানদের।’ তিনি যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বন্দীদশাকে ‘কারাগার’ বলে বর্ণনা করেছেন।
সন্তানকে পাশে নিয়ে এ কথাগুলো বলার সময় বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। তার চোখ থেকে অঝর ধারায় ঝরছিল পানি।
জান্না গ্যাব্রিল্যাঙ্কো বলেন, ‘তারা (তার স্বজন) এখনও চেরনিহিভ শহরেই রয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘চেরনিহিভের চারপাশ ঘিরে রাখা হয়েছে এবং আমাদের লোকজন (সেনা) তাদের (রুশ সেনা) শহরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু ভয়ে আমাদের সন্তানেরা কাঁদছে।’ জান্না বলেন, ‘আপনি জানেন না যে আপনি কি করবেন।’
ইউক্রেনের ওই নারী বলেন, ‘ইউক্রেনের অন্য শহরগুলোর মতো এ মুহূর্তে চেরনিহিভেও ব্যাপক গোলাবর্ষণ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘অনেক শিশু, নারী- তারা যে (শহর থেকে) বের হবেন, সে সুযোগটাও নেই।’